রাজনৈতিক উত্তেজনা মাঝে নবান্নে ইস্টার্ন জোনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠকের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। প্রায় ১৬ মিনিট মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদা করে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সূত্রের খবর, এদিন অমিত শাহের হাতে একটি স্মারকলিপি তুলে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে বিভিন্ন প্রকল্পের বাকি টাকা মেটানোর দাবি নিয়েই এই স্মারকলিপি বলেই সূত্রের খবর।
পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক করতে কলকাতায় এসেছেন অমিত শাহ। তাঁর সঙ্গে আলাদা করে কি বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী? শুরু থেকেই এই প্রশ্ন উঠছিল। সেই প্রশ্নের উত্তর মিলল শনিবার দুপুরেই। নবান্ন সভাঘরে ৫ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনার পরে নবান্নে নিজের ঘরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডেকে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরপর ১৪ তলার ঘরে একান্তে দুজনের মধ্যে প্রায় ১৫-১৬ মিনিট কথা হয়। সূত্রের খবর, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি অমিত শাহকে পাঞ্জাবি এবং শাড়ি উপহার দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রে খবর, পূর্বাঞ্চলের ৫ রাজ্যের সঙ্গে নিরাপত্তা বৈঠকে সীমান্ত সমস্যা এবং অনুপ্রবেশ নিয়ে দীর্ঘ প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। বৈঠকের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলাদা করে কথা হয় শাহের। কোন কোন বিষয়ে দুজনের মধ্যেই কথা হয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা তুঙ্গে।
উল্লেখ্য, সীমান্তে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি, কেন্দ্রীয় বকেয়ার পাশাপাশি একাধিক বিষয়ে রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্রের সংঘাত অব্যাহত। মনে করা হচ্ছে, সেইসব বিষয়েই কথা হয়েছে অমিত শাহ এবং মমতার মধ্যে। সূত্রের খবর, এদিন নবান্নে ইস্টার্ন জোনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের বৈঠকে অমিত শাহের সামনেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘১০০ দিনের কাজের টাকা আমরা কিছুই পাচ্ছি না।’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরে বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘আপনাদের নিয়ম-কানুনে কিছু সমস্যা ছিল। তার জন্যই আপনাদের সমস্যা হচ্ছে।’ রাজ্যের মুখ্যসচিব তখন বলেন, ‘আমরা সব পাঠিয়ে দিয়েছি। আমাদের যা ভুল ত্রুটি ছিল, সেগুলো স্পষ্ট করে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।’
মুখ্যমন্ত্রী তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে বলেন, ‘বিষয়টা আপনারা দেখুন।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে রাজ্যে তরফে যা যা চিঠি দেওয়া হয়েছে, সেই চিঠিগুলি তুলে দেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে।
উল্লেখ্য, এদিন অমিত শাহের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আলাদা বৈঠকের পর আদৌ দ্রুত কোনও সমাধান হবে কি? এই প্রশ্নও উঠছে। কবে এতদিনের বকেয়া মিটবে রাজ্যের? সেই প্রশ্নের এই মুহূর্তে কোনও উত্তর নেই। তবে, প্রশ্ন থাকলেও, এবং তাঁর উত্তর না মিললেও, তাঁদের এই একান্ত বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা সমালোচনাও শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। বিষয়টিকে অযথা ‘রাজনৈতিক’ রং দেওয়া হচ্ছে বলে মনে করছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।