শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার কলকাতা হাই কোর্টের নজরে এক অভিনেত্রী। তাঁর নাম উল্লেখ করে হলফনামা পেশের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। এদিকে, যুব তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুন্তল ঘোষের ফ্ল্যাট থেকে গত ডিসেম্বরের প্রাথমিক টেটের ওএমআর শিট উদ্ধারের ঘটনায় বিস্মিত বিচারপতি। যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের জমি দিয়ে আন্দামান পাঠিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে এক অভিনেত্রীর। এবার সেই অভিনেত্রীকে দেখতে চাইলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি তাঁর অভিনীত সিনেমাও দেখতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে অভিনেত্রীর নাম জানিয়ে ইডিকে আদালতে হলফনামা জমা দিতে বলেন বিচারপতি।
এদিন নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হঠাৎ উঠে আসে তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের প্রসঙ্গ। সেখান থেকেই যুক্ত হয় এক নামও। সেই সময়েই বিচারপতিকে বলতে শোনা যায়, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে এক অভিনেত্রীর নাম উঠে আসছে। আমি শুনেছি তিনি না কি তিনটি ফ্ল্যাট ভেঙে একটা বড় ফ্ল্যাট পেয়েছেন। জানতে চাই কে তিনি? নাম না করেই বিচারপতি উল্লেখ করেন, নিয়োগ দুর্নীতিতে কোন অভিনেত্রী জড়িত? সেই অভিনেত্রীকে দেখতে চাই এবং তাঁর সিনেমাও দেখতে চাই।
এদিনেই কুন্তল ঘোষ সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে। এদিন তিনি বলেন, যা চলছে দেখছি, তাতে মনে হয় কিছু দুষ্কৃতী রাজ্যটাকে ধ্বংস করে দেবে। কী ভাবে কুন্তলের কাছে যেতে পারে ওএমআর শিট এবং অ্যাডমিট কার্ড? এ নিয়ে ইডির কাছে জানতে চাইব। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী আদালতে জানান, সংবাদমাধ্যমের থেকে জানা গেছে, কুন্তলের বাড়ি থেকে ১৮৬টি ওএমআর শিট এবং অ্যাডমিট কার্ড পাওয়া গিয়েছে। যা শুনেই বেজায় চটে যান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, চিনার পার্কে কুন্তল ঘোষের জোড়া ফ্ল্যাটে তল্লাশির পর গত ২১ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার করে ইডি। তার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে একটি খাতা এবং একটি ডায়রি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ওই ডায়রিতে সাংকেতিক হরফে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লেখা রয়েছে বলেই ইডি সূত্রে খবর। সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল কুন্তলের ফ্ল্যাট থেকে গত ১১ ডিসেম্বরের টেটের অ্যাডমিট কার্ড, ওএমআর শিট, ডিএলএড সার্টিফিকেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কীভাবে কুন্তলের কাছে ওই নথি পৌঁছল, স্বাভাবিকভাবেই সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে কি ২০২২ সালে নিরাপত্তার চাদরে মোড়া টেটেও চাকরি বিক্রি হয়েছে? গত বছর যে সময় টেট পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সেই সময়ে নিয়োগ দুর্নীতির মূল চাঁইদের অনেকেই জেলবন্দি। তাহলে কে বা কাদের নির্দেশে দুর্নীতি করে কুন্তল, এমনই নানা প্রশ্নের খোঁজে তদন্তকারীরা।
ইডির কাছ থেকে সমস্ত বিষয়ে জানতে চেয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে কি আগামী দিনে সেই অভিনেত্রীর নামও প্রকাশ্যে আসতে পারে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে। অর্পিতার পর আর কার নাম জড়াবে? প্রশ্ন চাকরি প্রার্থীদের।