৩৬ বছরের শাপমুক্তি! মারাদোনার দ্যুতিকে স্পর্শ মেসির, তারুণ্যকে হারিয়ে বিশ্বখেতাব বৃদ্ধ রাজার ঝুলিতে

এ বিষয়ে কোনও দ্বিমত নেই যে, এক স্বপপূরণ। রবিবার রাতকে ব্যাখ্যা করা খুবই কঠিন। এক নতুন ইতিহাস রচিত হল। ফাইনাল বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা ফাইনাল। শুরু থেকেই বারবার খেলার রঙ বদল হয়েছে। শুরু থেকেই ছিল টানটান উত্তেজনা। নিজেদের সেরাটা আজ উজাড় করে দিতে এতোটুকু কার্পণ্য করেনি।

এর আগে ২০১৪ সালেও সম্ভব হয়নি। সেবার ভাল খেলার পরেও স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল। একটা অপ্রাপ্তি যেন কুরে কুরে খাচ্ছিল। স্বপ্নভঙ্গের পর আজ সেই অপ্রাপ্তির ঝুলিতে যেটুকু শূন্যতা ছিল তাও পূর্ণ হল, মেসির সেই জাদুতেই। রবিবারের ফুটবল মহারণে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী ফ্রান্সকে হারানোর পর আর কোনও অপ্রাপ্তি রইল না LM-10-এর। আর হ্যাঁ, আজকের জয়ের মধ্যে দিয়ে, দিয়েগো মারাদোনার অলৌকিক দ্যুতিকেও মনে হয় স্পর্শ করে ফেললেন লিওনেল মেসি। তারুণ্যকে পিছনে ফেলে আজ বৃদ্ধ রাজাই সেরার সেরা।

খেলার প্রথমার্ধে লিওনেল মেসি ও আঙ্খেল দি মারিয়ার গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। কিন্তু খেলা ঘুরিয়ে দিলেন পরের ধাপে একজনই, আর তিনি হলেন কিলিয়ান এমবাপে, খাতায়কলমে আজ ফ্রান্স জিততে না পারলেও, এমবাপে একাই জয়ের সম্ভবনা তৈরি করেছিলেন। তাই তাঁকে আজ ‘পরাজিত নায়ক’ বললেও অত্যুক্তি করা হবে না। কিন্তু শেষপর্যন্ত যেটা হওয়ার ছিল সেটাই হল। এমবাপে গোল পরিশোধ করার পরেও মেসি দুর্দান্ত একটি গোল করেন, ফল দাঁড়ায় ৩-২। এরপর আবার সেই তারুণ্যের দাপট। ফের গোল শোধ করেন তিনি।

এদিন খেলাটা হয়েছে মূলত তরুণ যুবরাজ বনাম বৃদ্ধ রাজার। একদিকে ভরপুর তারুণ্যে ভরা গতির মালিক একজন আর অপরদিকে, বৃদ্ধ হলেও, গতি কমলেও এখনও তার ধার কমেনি এতোটুকু, তিনি মেসি। তবে, নিজের শেষ বিশ্বকাপ চির স্মরণীয় করে রাখতে শুরু থেকেই মরিয়া হয়ে খেলেছিলেন আজ মেসি। আর তাঁকে প্রথম থেকে সাপোর্ট করে গেছেন দলের প্রত্যেকে। প্রথমার্ধে সেই ঝলক বেশি করে চোখে পড়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে মেসির দল একটু শ্লথ হলেও, পরে ফের জেগে ওঠে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে হল খেলার ফয়সালা। সেখানে ফ্রান্সকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ছিনিয়ে নিল আর্জেন্টিনা। সেই সঙ্গে ৩৬ বছরের শাপমুক্তি ঘটল সেই বৃদ্ধ রাজার জাদুতে ভর করেই।

এদিন ম্যাচের শেষে মেসিকে দেওয়া হল গোল্ডেন বল, এমবাপে পেয়েছেন গোল্ডেন বুট, আর্জেন্টিনার গোলকিপার মারটিনেজ পেয়েছেন গোল্ডেন গ্লাপস।

Latest articles

Related articles