আজ ডুরান্ড কাপ ফাইনালের ডার্বি নিয়ে উত্তেজনার পারদ মারাত্মক রকম চড়ে রয়েছে। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান , দুই ক্লাবেরই শীর্ষকর্তারা একে অপরকে আক্রমণ করে ওই উত্তাপ আরও বাড়িয়েছেন। খাতায়-কলমে অনেক শক্তিশালী মোহনবাগানকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। তাই দুই প্রতিপক্ষ আবার মুখোমুখি হওয়ায় এই ডার্বিটির বেশ কয়েকটি আঙ্গিক বেরিয়ে এসেছে।
মোহনবাগান ভক্তদের দৃষ্টিভঙ্গি:
সবুজ মেরুন সমর্থকদের কাছে হিসেব পরিস্কার। এই ফাইনাল তাদের কাছে বদলার ম্যাচ। যেভাবে শক্তিশালী মুম্বাই সিটি এফসি এবং এফসি গোয়াকে হারিয়ে তারা ফাইনালে পৌঁছেছে, সেভাবেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বিদের বিরুদ্ধে দাপটে জয় চাইছে তারা। রেফারিং নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে সেটিকে তারা ইস্টবেঙ্গল ভক্তদের বাহানা হিসেবে উপেক্ষা করতে চাইছে। কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে গোল করা বিদেশি ফরোয়ার্ড সাদিকু জানিয়ে দিয়েছেন এই ম্যাচ তার কাছে বদলার ম্যাচ। দলের অন্যতম বড় তারকার এহেন আত্মবিশ্বাস দেখে ফুটছে মোহনবাগান ভক্তরা।
ইস্টবেঙ্গল ভক্তদের দৃষ্টিভঙ্গি:
লাল হলুদ ভক্তরা জানেন যে খাতায়-কলমে তাদের প্রতিপক্ষ তাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবুও গত ডার্বির ফলাফল এবং কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের আত্মবিশ্বাস তাদেরকে ভরসা যোগাচ্ছে। ইস্টবেঙ্গল কোচ স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তারা জয়ের জন্যই মাঠে নামবেন। তাদের দলে এখনো অনেক ভুল ভ্রান্তি রয়েছে, বেশ কিছু তারকা এখনও নিজেদের সেরা ছন্দ খুঁজে পাননি। তা সত্ত্বেও ট্রফি জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী কুয়াদ্রাত।
বিতর্কে জর্জরিত:
এই ডার্বির আগে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে রেফারিদের তরফ থেকে অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার অভিযোগ তুলে চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছে ইস্টবেঙ্গল। পাল্টা হিসেবে নর্থইস্ট ম্যাচে অ্যাওয়ে সমর্থকদের বিরুদ্ধে কিছু সংখ্যক ইস্টবেঙ্গল ভক্তদের করা বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যর প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা চাপ বাড়ানোর চেষ্টায় মোহনবাগান। ঠান্ডা লড়াইয়ের ফল মাঠে কি হয় সেদিকে নজর থাকবে।
ঐক্যবদ্ধ ইস্ট-মোহন:
তবে ডুরান্ড কমিটির আয়োজন ব্যবস্থা নিয়ে এক সুরে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে ভক্তরা। ম্যাচের আগে টিকিটের হাহাকার দেখা দিয়েছে এবং ব্ল্যাকারদের দাপটে ১০০ টাকা মূল্যের টিকিট কোথাও ৫০০ আবার কোথাও ৭০০ টাকায় বিক্রি হতেও দেখা গিয়েছে। ব্লেকারদের হাতে এই বিপুল পরিমাণ টিকিট কিভাবে এলো তাই নিয়ে ডুরান্ড কমিটির প্রতি চোখা বাক্যবাণ নিক্ষেপ করেছে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান সমর্থকরা। এই টিকিট দুর্নীতির পেছনে রাজনৈতিক যোগ আছে কিনা সেই প্রশ্নও তুলেছেন অনেকে। সব মিলে আজকের মহারানীর আগে কোথাও গিয়ে ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান ভক্তদের মধ্যে একটা সম্প্রীতির আবহাওয়াও তৈরি হয়েছে এই দুর্নীতিকে কেন্দ্র করে।