বিতর্কিত ‘মাছ’ মন্তব্যে কলকাতা হাইকোর্টে ‘রক্ষাকবচ’ পেলেন প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ তথা বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার নির্দেশ, এখনই পরেশকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। ভার্চুয়ালি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ। বাঙালি বিদ্বেষী মন্তব্য কাণ্ডে বিজেপি ঘনিষ্ঠ অভিনেতা পরেশ রাওয়ালকে রক্ষাকবচ দিলেন কলকাতা হাইকোর্ট বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। আগামী সোমবার মামলার পরবর্তী শুনানি।
প্রসঙ্গত, গুজরাটে প্রচারে গিয়েছিলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ পরেশ রাওয়াল (Paresh Rawal)। সেখানেই বাঙালির মাছ খাওয়া নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন তিনি। এরপরেই অভিনেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় জমা পড়ে অভিযোগ। এমনকি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরেশকে কলকাতায় তলব করেছিল পুলিশ। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহে তাঁকে হাজিরা দিতে নোটিশ পাঠিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ করে আদালতের দ্বারস্থ হন পরেশ। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে কলকাতা পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না বলে এদিন জানিয়ে দিল আদালত।
ওই মামলার প্রেক্ষিতে ফেব্রুয়ারি প্রথম সপ্তাহে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বিজেপি ঘনিষ্ঠ এই বলিউড অভিনেতাকে। এ নিয়ে পরেশ রাওয়ালকে একটি নোটিসও পাঠায় তালতলা থানা। সেই নোটিসকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পরেশ রাওয়াল। তাঁর আইনজীবি ধিরাজ ত্রিবেদী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল কারও ভাবাবেগে আঘাত করার জন্য ওই মন্তব্য করেননি। পরবর্তীকালে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন ট্যুইটের মাধ্যমে।
এর পরে বিচারপতি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা মহম্মদ সেলিমের আইনজীবী শামিম আহমেদের উদ্দেশ্যে বলেন, “উনি তো ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন।” উত্তরে শামিম আহমেদ আদালতের কাছ থেকে সময় প্রার্থনা করেন। আগামী সোমবার এ বিষয়ে মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য আদালতে জানাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
গত ডিসেম্বরে গুজরাতের বলসারে বিজেপির হয়ে প্রচার সারতে গিয়েছিলেন পরেশ। সেখানে তিনি বলেছিলেন, “গ্যাস সিলিন্ডারের দাম বেড়েছে। এটা ঠিক। কিন্তু সেই দাম কখনও না কখনও কমবে। কিন্তু, কী হবে যখন রোহিঙ্গারা, বাংলাদেশিরা আপনারই বাড়ির চারপাশে থাকতে শুরু করবে। দিল্লিতে যেমন হচ্ছে। তখন গ্যাস সিলিন্ডার নিয়ে কী করবেন? বাঙালিদের মাছ রান্না করে খাওয়াবেন?”
এরপরেই তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করে সরব হন বাঙালিরা। বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ ওঠে পরেশ রাওয়ালের বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য ট্যুইট করে নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান অভিনেতা। জানান, তিনি বাঙালি বলতে বাংলাদেশী বোঝাতে চেয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে নয়।