ধুতুরা, আকন্দ, অপরাজিতা, কলকে প্রভৃতি ফুল শিবের প্রিয় বলে জানা যায়। তবে মহাদেব বেলপাতাতেই (Bel Pata) সবচেয়ে বেশি তুষ্ট হন।হিন্দুধর্ম অনুযায়ী ,শিবরাত্রির দিন মহাদেবের পূজা করার জন্য সবচেয়ে শুভ দিন বলে মনে করা হয় ।শিব পুজোয় বেল পাতা গুরুত্বপূর্ণ আর এই বেলপাতা সঠিকভাবে নিবেদন না করলে পুজো অসম্পূর্ণ বলে বিবেচিত হয় ।শিবলিঙ্গে বেল পাতা অর্পনের সঠিক নিয়ম আছে ।
পুরাণ মতে সমুদ্র মন্থন সময় শিব বিষ পান করেছিলেন।সেই সময় বিষের তেজে তাঁর শরীর নীল হয়ে যায় বলেই, শিবের আরেক নাম ‘নীলকণ্ঠ’। এই ভাবেই সৃষ্টির রক্ষা করেছিলেন মহাদেব, তাই তাঁকে ‘সৃষ্টির রক্ষাকর্তা’ বলা হয়।মহাদেবের শরীরের বিষের তেজে সেই সময় তাঁর সারা শরীরের তাপমাত্রা প্রবল বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফলস্বরূপ, পরিবেশ জ্বলতে শুরু করে। সেই সময় স্বর্গের দেব -দেবীরা বেলপাতা দিয়ে ভোলানাথকে স্নান করান।এবং শরীর ঠান্ডা হয় ।তার পর থেকেই বেলপাতা শিব পুজোয় ব্যবহার করা হয় ।
ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে মহাশিবরাত্রি উৎসব পালিত হয় ।এই বছর ১৮ফ্রেবুয়ারী ,শনিবার পালিত হবে শিবরাত্রি ।এই বিশেষ দিনে বেলপত্রে রয়েছে আলাদা ধর্মীয় গুরুত্ব ।বেলপাতা শিবলিঙ্গে দেওয়ার সময় সঠিক ভাবে দেওয়া হচ্ছে কিনা তা মাথায় রাখতে হবে ।নয়তো শিবপুজো অসম্পূর্ণ রয়ে যাবে ।
গাছ থেকে বেলপাতা তোলার সময় মনে কোনো রকম ভাবনা রাখা যাবে না ।বেলপত্রে পুরো গাছের ডাল ভেঙে ফেলবেন না ।বরং একটা একটা করে পাতা নিতে হবে ।বেলপাতা তোলার পর মনে মনে শিব ঠাকুর এর নাম জপতে থাকুন।
শিবলিঙ্গে বেল পাতা অর্পণ করার সময় সবসময় উল্টোদিকে নিবেদন করা উচিত ।অর্থাৎ যে দিকে বেল পাতার মসৃন পৃষ্ট থাকে সেই দিকটি অর্পণ করবেন ।মাথায় রাখবেন যে অনামিকা ,বুড়ো আঙ্গুল এবং মধ্যমা সাহায্যে বেলপত্র নিবেদন করা উচিত ।বেলপাতা যেন কোথাও কোনো ভাবে ছেঁড়া বা কাটা না থাকে ।বিশ্বাস করা হয় ,এর জেরে অশুভ প্রভাব পড়তে পারে ।অর্ঘ্যের আগে বেলপাতা ধুয়ে তাতে রামের নাম বা ওম নমঃ শিবায় লিখুন ।বিশ্বাস করা হয় যে এতে ভগবান শিব দ্রুত সন্তুষ্ট হয় এবং মনোবাঞ্ছনা পূরণ করেন ।